বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদেয় এলো বান
বানের জলে ভাসলো পুকুর ভাসলো আমার গান
বন্ধু আইসোরে…
কোলেতে বসতে দেবো মুখে দেবো পান
বৃষ্টি মানেই আলাদা ভালোলাগা, বৃষ্টি মানেই অন্যরকম স্নিগ্ধতা। ‘জলের গান’ দলের গাওয়া এই গানে লেগে আছে তারই ছোঁয়া। অতিথি পরায়ণ বাঙ্গালি জাতি যেন এই উদাস বৃষ্টিতে বেশি করে কাছে পেতে চায় বন্ধুদের, অতিথিদের। বৃষ্টির দিনে অতিথি মানেই অপ্যায়নে থাকে খিচুড়ি। শুধু অতিথি নয় বৃষ্টির দিনে পরিবারসহ খিচুড়ি খাওয়াতে যেন অন্য রকম অনুভুতি কাজ করে। আর সঙ্গে ইলিশ ভাজা হলে যেন ভিন্ন মাত্রা যুক্ত হয়।
কিন্তু বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি কেন?
খিচুড়ি মূলত বাউলদের খাবার। এই ছন্নছাড়া গানপাগল মানুষগুলো গান শুনিয়ে মানুষের বাড়িতে পেতেন চাল ও ডাল। তাই তারা এই চাল ডাল মিলিয়ে খুব দ্রুত ও ঝামেলা মুক্ত ভাবে রেধে ফেলতেন খিচুড়ি।
অন্যান্য সময় তারা ভিন্ন কোন খাবার রান্না করলেও বৃষ্টির দিনে পেট পুজা করবার এই একটাই খাবার খিচুড়ি।
শুধু তাই নয় গ্রামাঞ্চলে রান্নাঘর ঘরের বাইরে হওয়ায় ভিজে যেত চুলা। তাই সহজেই চাল ডাল ও সবজি মিলিয়ে খুব দ্রুত হয়ে যায় খিচুড়ি। এসব কারণেই বৃষ্টির দিনের সঙ্গে মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে খিচুড়ি সংস্কৃতি। ইলিশ মাছ ভাজা এসেছে, বর্ষাকালে নদীর তাজা ইলিশ মেলে অধিক পরিমানে। এই কারণে খিচুড়ির সঙ্গে ইলিশ মাছ ভাজা জড়িয়ে গেছে। আবার খিচুড়ি একটি গুরুপাক খাবার। এই খাবার খেলে হজম সমস্যা হয় ব্যাপক পরিমানে। এই স্বাদের খাবার গরমে খাওয়া বিপদজনক। তাই বৃষ্টিতে ঠান্ডা আবহাওয়ায় খিচুড়ি খেয়ে সমস্যায় পড়তে হয় না গ্রহণকারীদের।
খিচুড়ির ইতিহাস যাই হোক না কেন, আজকের এই বৃষ্টি স্নাত আবহাওয়ায় চাইলেই পেটপুরে আয়েশ করে খেতে পারেন খিচুড়ি। বৃষ্টি বিলাস উদযাপন করবার এযেন মোক্ষম হাতিয়ার।