সতর্ক থাকার উপায় কি? স্পামিং ও তথ্য চুরিতে

কর্তৃক প্রযুক্তি সারাদিন
0 মন্তব্য 335 ভিউজ

একজন মানুষ তার তথ্য সংরক্ষণ করার অধিকার রাখে। এবং সে চেষ্টা চালায় যাতে তার তথ্য কোন ব্যক্তিবর্গ অথবা কোন প্রতিষ্ঠানের নিকট ফাস না হয়৷ কিন্তু তারপরেও বিভিন্ন ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংরক্ষিত বিভিন্ন ধরনের গোপন তথ্য স্পামিং, হ্যাকিং অথবা তৃতীয় পার্টির কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ফাঁস হয়ে যাচ্ছে৷ অথবা বিক্রি হচ্ছে। ফেসবুকের প্রতি চারটি একাউন্টের প্রায় একটি একাউন্ট এর তথ্যের গোপনীয়তা ফাঁস হয়।

লুডু স্টার একসময় ঘরে বসে পরিবারের সাথে সময় কাটানোর জন্য দারুণ মাধ্যম ছিল৷ তবে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা এই গেমটির বিরুদ্ধে তথ্য চুরির অভিযোগ আসে । এবং অতঃপর তা তদন্ত করে সত্য বলে প্রমাণিত হয়৷ লুডু স্টার গেমটি খেলার সময় আপনার জিমেইল একাউন্ট অথবা ফেসবুক আইডি দিয়ে গেমটি তে সাইন আপ করতে হয়৷ এবং এভাবেই সকল তথ্য লুডু স্টার গেমটির কর্তৃপক্ষের হাতে হস্তান্তর হয়৷

বিশেষ করে লুডুস্টার গেমটি বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান এর মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে । এর মধ্যে ভারত এবং পাকিস্তানের মানুষের তথ্য বেশি ফাস হয়েছে৷ বর্তমান সময়ে টিকটক অন্য থার্ড পার্টি কোম্পানির কাছে তথ্য বেচে দেওয়া কেলেঙ্কারিতে জড়িত।

এমন আরও অসংখ্য অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে যেগুলোতে আমাদের নিজেদের জিমেইল একাউন্ট এবং ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সাইন আপ করতে হয়৷ ফলস্বরূপ তাদের তথ্য চলে যাচ্ছে অন্য থার্ড পার্টি কোম্পানির কাছে।

লুডু স্টার অথবা টিক টক এর কথা বাদই দিলাম৷ অনেক সময় ফ্রি লাইক আর ফ্রি ফলোয়াল এইসবের খোঁজে আমরা বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করি। এবং সেখানে আমাদের ফেসবুক আইডির তথ্য দিয়ে সাইন আপ করে। সেখান থেকে আমাদের তথ্য ফাঁস হওয়ার বিরাট বড় একটি সম্ভাবনা থাকে৷ এগুলোকে বলা হয় স্পামিং৷

তাহলে এই ধরনের শপিং স্পামিং ওয়েবসাইট থেকে বিরত থাকার উপায় কি?

প্রথমত না জেনে না শুনে কোন সাইট অথবা অ্যাপ্লিকেশনে হুটহাট সাইন আপ করবেন না।

দরকার হলে আপনি একটি ফেক ফেসবুক একাউন্ট ক্রিয়েট করুন৷ তারপর সেটি দিয়ে সেই থার্ড পার্টি এপ্লিকেশন অথবা সাইটে সাইন আপ করতে পারেন৷

ফ্রি লাইক, ফ্রী ফলোয়ার্স এ ধরনের কোনো ওয়েবসাইট খুঁজে খুব একটা লাভ হবে না।

কারণ এগুলোর ৯৮% ওয়েবসাইটে ফেইক হয়৷ যেগুলো সর্বদাই চায় ফেসবুক অ্যাকাউন্টের তথ্য চুরি করতে৷

এমনকি অনেক সময় অ্যাকাউন্টগুলো হ্যাকিংয়ের সম্মুখীন হয় । পরবর্তীতে তা আর রিকভারি করা যায় না।

এবার একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে আসা যাক!

স্পামিং এর শিকার হয়ে তো অনবরত মানুষ তাদের ফেসবুক একাউন্ট হারাচ্ছে। এখন তাহলে এই হারানো ফেসবুক একাউন্ট ফিরে পেতে হলে অর্থাৎ একাউন্ট রিকভারি করতে হলে আমাকে কোন ধরনের সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে৷

এর একটি মাত্রই উপায় রয়েছে৷ সেটি হচ্ছে সব সময় ফেসবুক একাউন্ট ক্রিয়েট করার সময় সঠিক ইনফরমেশন দিন৷ কেনোনা আপনার একাউন্ট রিকভারি করতে ফেসবুকে আপনার জরুরি ডকুমেন্ট, যেমন :এনআইডি কার্ড, লাইসেন্স ইত্যাদি দেখানোর প্রয়োজন পড়তে পারে। এবং ফেসবুক কতৃপক্ষ তখন যদি দেখে আপনার অ্যাকাউন্টের ইনফরমেশন এর সাথে সেই ডকুমেন্টগুলি এর তেমন কোনো বিশেষ মিল নেই, তাহলে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট টি ও নিজের বলে বিবেচিত হবে না৷ এবং ফেসবুক আপনার অনুরোধটি বাতিল করে দেবে৷ মাঝখান থেকে আপনি আপনার ফেসবুক আইডিটি হারাবেন৷ সুতরাং আমার পরামর্শ ফেসবুক আইডি ক্রিয়েট করার সময় নিজের নাম নিজের ঠিকানা দিয়ে ফেসবুক আইডি ক্রিয়েট করুন। “নীল আকাশ”, “অসীম প্রেম” এই ধরনের ভিত্তিহীন নাম থেকে দূরে থাকুন।

পরিশেষে কোন থার্ড পার্টি ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ্লিকেশনকে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের তথ্য দেওয়ার সময় বিশ্বস্ততা পরীক্ষা করে নিন।

মনে রাখবেন ফেসবুকের কাছে মার্ক জুকারবার্গ এবং আপনার অ্যাকাউন্ট দুইটিরই সমান গুরুত্ব।

0 মন্তব্য
0

তুমিও পছন্দ করতে পার

মতামত দিন