ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার কিভাবে শুরু করবেন

কর্তৃক মাহমুদুল হাসান
1 মন্তব্য 1781 ভিউজ

আজকে আপনাদের সাথে তুলে ধরবো,ডিজিটাল মার্কেটিং করতে হলে কি কি শিখতে হবে এবং কিভাবে শুরু করবেন সফল ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার। বর্তমানে অনলাইন আয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং। ডিজিটাল মার্কেটিং করে অনেকেই প্রতি মাসে প্রায় ১ লাখ টাকার উপরে উপার্জন করছেন। যে কোন পণ্য কেনা-বেচার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের প্রয়োজনীতা অপরিসীম। শুধু টাকার দিকটা না দেখে চলুন জেনে আসা যাক কিভাবে হবেন একজন সফল ডিজিটাল মার্কেটার।

ডিজিটাল মার্কেটিং আসলে কি?

ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করার মাধ্যমে পন্য ও সেবার বিজ্ঞাপন ও প্রচার করা হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং। বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস যেমন মোবাইল, কাম্পউটার, ল্যাপটপের মাধ্যমে ইনটারনেট ব্যবহার করে সার্চ ইন্জিন, ওয়েবসাইট, ইমেইল, ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম মোবাইল এ্যাপস ইত্যাদি ব্যবহার করে পন্য বা সেবা সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য ক্রেতা বা ভোক্তার কাছে উপস্থাপন করা হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং। এছাড়াও ডিজিটাল বিলবোর্ড বা টেলিভিশন পন্য ও বিভিন্ন উপায়ে সেবা প্রচার করাই হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং।

ডিজিটাল মার্কেটিং অনেক বড় একটি পেশা। আমি যদি বলি আমি একজন ডিজিটাল মার্কেটার তাহলে ভুল হবে, কারন আমি নিজেও এখনো ডিজিটাল মার্কেটার হতে পারি নাই। কারন ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরের যতগুলো বিষয় আছে সবগুলোতে যদি আপনার বাস্তব জ্ঞান থাকে,এবং আপনি সবগুলো বিষয়ে যদি স্কিল থাকেন তাহলে আপনাকে ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে নিজেকে দাবী করতে পারবেন।

এখন চলুন দেখি কি কি বিষয় আছে ডিজিটাল মার্কেটিংয়েঃ

০১. সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাউজেশন (SEO)
০২. ভিডিও মার্কেটিং
০৩. সোশিয়াল মিডিয়া মার্কেটিং
০৪. ইউটিউব মার্কেটিং
০৫. ইমেইল মার্কেটিং
০৬. এফিলিয়েট মার্কেটিং
০৭. সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (SEM)
০৮. ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং
০৯. কন্টেন্ট মার্কেটিং
১১. কন্টেন্ট অটোমেশন
১০. ক্যাম্পেইন মার্কেটিং
১১. সোশ্যাল মিডিয়া অপটিমাইজেশন
১২. ই-কমার্স মার্কেটিং

উপরোক্ত বিষয় গুলোর সমন্বয়ে ডিজিটাল মার্কেটিং করা হয়ে থাকে। আপনি নিজেকে একজন ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট ততক্ষণে বলতে পারবেন না যতক্ষন না, আপনি এই সবগুলো বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে না পারবেন। সহজ করে বলতে গেলে এইসব বিষয় গুলোর যেকোন একটি বিষয়ে যদি আপনি নিজেকে পতিষ্ঠিত করতে পারেন, নিজের পরিশ্রম দিয়ে এক্সপার্ট লেভেল এ নিয়ে যেতে পারেন। তাহলে আপনি অবশ্যই একটা সময় ভাল উপার্জন করতে পারবেন। সহজ অনেক রাস্তাই আছে ডিজিটাল মার্কেটিং থেকে উপার্জন করার, কিন্তু আপনি যদি একটি বিষয়ে এক্সপার্ট হতে পারেন, তাহলে সেটা দিয়ে ভবিষ্যতে নিজেকে ভাল একটি জায়গায় নিয়ে যেতে পারবেন।

কিভাবে শুরু করবেনঃ

আপনি প্রথমে যেকোন একটি বিষয় নিয়ে শুরু করুন, উপরে ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে মোটামুটি একটি ধারনা পেয়ে গিয়েছেন আপনাকে কি কি শিখতে হবে। সবগুলো বিষয় শুরু করলে নিজেকে হারিয়ে ফেলবেন। এদিক-ওদিক করে পরে কিছুই শিখতে পারবেন না। ডিজিটাল মার্কেটিং করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন। তাই প্রথমে এগুলোর মধ্যে পছন্দের একটি বিষয় সিলেক্ট করতে পারেন।

যেমনঃ আপনার প্রথম পছন্দ যদি হয় ইউটিউব মার্কেটিং, তাহলে এই ইউটিউব মার্কেটিং এর সাথে আর কি কি বিষয় আপনার শিখতে হবে তা ভালো ভাবে জানুন এবং বুঝুন। আপনি যদি ইউটিউব মার্কেটিং শুরু করেন তাহলে চলুন জেনে নেই  আপনাকে কি কি শিখতে হবে-

প্রথমে আপনাকে ইউটিউব এর জন্য একটি নিশ পছন্দ করতে হবে, নিশ হলো আমরা বিষয় নিয়ে কাজ করবো তাই হল নিশ, যেমনঃ কেউ গেমিং নিয়ে কাজ করেন গেমিং একটি নিশ।
নিশ পছন্দের পর আপনাকে কন্টেন্ট তৈরি করতে হবে, অবশ্য ইউটিউব এর নিয়ম কানুন আগে এক সপ্তাহ পড়ে নিবেন। কন্টেন্ট তৈরি করতে হলে জানতে হবে ভিডিও এডিটিং, মোটামুটি ভাল লেভেলের ভিডিও এডিটিং করার জন্য আপনি ক্যামটাশিয়া (Camtasia Studio) দিয়ে শুরু করতে পারেন। আপনি এখন প্রফেশনালি ভিডিও এডিটিং শিখতেছেন না প্রয়োজন যতটুকু ততটুকু শিখবেন।পরে প্রয়োজন হলে সময় নিয়ে প্রফেশনালি ভিডিও এডিটিং শিখে নিবেন। ভিডিও এডিটিং শিখার জন্য আপনি ইউটিউব এ সার্চ করতে পারেন,Camtasia Video Editing Bangla TuTorial দিয়ে সার্চ করতে পারেন।

ভিডিও এডিটিং মোটামুটি লেভেল শিখতে পারলে আপনাকে পরবর্তিতে ভিডিও আপলোড, এবং ইউটিউব ভিডিও এস ই ও, থাম্বনেইল তৈরি, ইউটিউব চ্যানেল ব্যানার তৈরি, এই বিষয় গুলো শিখতে হবে। এইগুলোও শিখার জন্য অনেক ইউটিউব চ্যানেল আছে আপনারা চাইলে projuktisaradin ইউটিউব চ্যানেল থেকেও শিখে নিতে পারেন। আপনি যখন ভিডিও আপলোড করা শুরু করবেন তখন আপনার স্যোশাল মিডিয়া প্রমোশন এর প্রয়োজন হবে। এখন আপনাকে আস্তে আস্তে স্যোশাল মিডিয়া মার্কেটিং এর দিকে নজর দিতে হবে। স্যোশাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ে আপনি শিখে নিবেনঃ

০১. ফেসবুক মার্কেটিং
০২. টুইটার মার্কেটিং
০৩. ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং
০৪. লিনক ইডিন মার্কেটিং
০৫. রেডিট মার্কেটিং

এছাড়া যত স্যোশাল মিডিয়া আছে সবগুলোতে আস্তে আস্তে সময় দিন নিজের ব্রান্ডিং তৈরি করুন। আর যত পারেন নিজের তৈরি নেটওয়ার্কিং বড় করুন। স্যোশাল মিডিয়া ফ্রেন্ড লিস্টে অযথা এক হাজার ফ্রেন্ড থাকার চেয়ে ১০০ স্যোশাল মিডিয়া মার্কেটা ফলোয়ার হয়ে থাকাটা অনেক ভাল। দেখে দেখে অনেক কিছুই শিখা যায়। সি ফাস্ট দিয়ে রাখুন, তাহলে তাদের পোস্ট করা মাত্রই আপনি পেয়ে যাবেন। এইভাবে অনুস্মরণ করলে আপনি ইউটিউব মার্কেটিং এবং সোশিয়াল মিডিয়া মার্কেটিং  তিন চার মাসের মধ্যে নিজের আয়ত্বে নিয়ে আসতে পারবেন। শুধুমাত্র ইউটিউব মার্কেটিং এবং সোশিয়াল মিডিয়া মার্কেটিং দিয়েও খুব ভাল আয় করতে পারবেন।

বিদ্রঃ ইতিমধ্যে যারা এই পোস্টটি পড়েছেন, আশা করছি তারা ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে একটা ধারণা পেয়ে গিয়েছেন। পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আপনাদের সাপোর্ট পেলে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সবগুলো বিষয় নিয়ে লিখার ইচ্ছা আছে। পোষ্টের নিচে আপনাদের মতামত দিন।

1 মন্তব্য
0

তুমিও পছন্দ করতে পার

1 মন্তব্য

Md Abu Taher July 1, 2020 - 6:44 pm

সব কিছু একসাথে শুরু করাটা বোকামিও বটে, কারন সবগুলো বিষয় শুরু করলে নিজেকে হারিয়ে ফেলবেন। নিজের উপর আকাশ সমান চাপ ও মনে হতে পারে।

তাই প্রথমে এগুলোর মধ্যে পছন্দের একটি বিষয় সিলেক্ট করতে পারেন।

উত্তর

মতামত দিন