আপনার ব্যক্তিগত তথ্য থেকে শুরু করে অফিসিয়াল, জাতীয় তথা আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ইন্টারনেটের অবাধ ব্যবহার লক্ষ করা যায়। আর তাই বর্তমানে নিরাপত্তা , অ্যাক্সেস কন্ট্রোল বা অনধিকার প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বায়ােমেট্রিক পদ্ধতি ব্যাবহার করা হচ্ছে। বায়ােমেট্রিক অ্যাক্সেস কন্ট্রোল পদ্ধতি একটি আকর্ষণীয় পদ্ধতি। এই পদ্ধতি সাধারণত ২ ধরনের কাজে ব্যবহৃত হয়। ১. কোন ব্যক্তি সনাক্তকরণ, ২. সত্যতা যাচাই তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তি এমন একটি প্রযুক্তি যেখানে কোন ব্যক্তির দেহের গঠন ও আচরণগত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে তাকে চিহ্নিত করা হয় ।
গ্রীক শব্দ ” bio ” ( life ) ও ” metric ” ( measure ) থেকে উৎপত্তি ( Biometrics ) । কম্পিউটার বিজ্ঞানে বায়ােমেটিক্সের সাহায্যে মানবদেহের অদ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য সনাক্ত এবং বিশ্লেষন করা হয়। তথ্য প্রযুক্তিতে প্রমাণীকরণ ( Authentication ) এর কাজে বায়ােমেটিক্স ব্যাবহার করা হয়। এটি হলাে মানুষের কিছু অঙ্গ – প্রত্যঙ্গ বা স্বভাব , গুণাগুণ ব্যবহার করে মানুষকে চিহ্নিত করার মাধ্যমে আইডিন্টিফিকেশন এবং এক্সেস কন্ট্রোল করা হয় । বায়ােমেট্রিক্স ইনপুট যন্ত্রের মাধ্যমে তথ্য ( ছবি , আঙ্গুলের ছাপ , চোখের মাপ , ভয়েস ) নিয়ে কম্পিউটারে পূর্ব থেকে ডেটাবেজে সংরক্ষণ করা হয় । একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য ডেটাবেজে এনক্রিপটেড অবস্থায় রেখে দেওয়া হয় ।
কোনাে নির্দেষ্ট ব্যক্তির আইডেন্টি ম্যাচ করানাের জন্য প্রথমেই কোনাে ব্যক্তির বায়ােমেট্রিক্স ডেটা ( DNA , আঙ্গুলের ছাপ , চোখের রেটিনা ও আইরিস , ভয়েস নিদর্শন , মুখের নিদর্শন ) বায়ােমেট্রিক্স ডিভাইস দ্বারা স্ক্যান করে ইনপুট দেওয়া হয় । তারপর কম্পিউটারে সংরক্ষিত তথ্যের সাথে মিলিয়ে দেখা হয় । সংরক্ষিত তথ্যের সাথে মিলিয়ে যদি মিল পাওয়া যায় তাহলে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে উক্ত প্রযুক্তিতে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়।
বায়ােমেট্রিক্সের প্রকারভেদঃ
মানুষের দেহের গঠন এবং আচরণগত বেশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে বায়ােমেট্রিক পদ্ধতি বিভিন্ন প্রকার হতে পারে। যেমনঃ
১. Physiological বা দেহের গঠন ও শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যের বায়ােমেট্রিক পদ্ধতি : *ফিংগারপ্রিন্ট *হ্যান্ড জিওমিট্র *ফেইস রিকোগনেশন *আইরিস ও রেটিনা স্ক্যান *ডিএনএ ( DNA )
২. আচরণগত বৈশিষ্ট্যের বায়ােমেট্রিক পদ্ধতি : *ভয়েস রিকগনিশন *সিগনেচার ভেরিফিকেশন *একজন ব্যক্তির টাইপ করার রিদম ( টাইপিং কীস্টোক) বর্তমান বিশ্বে, এই পদ্ধতিটি গুলো মানুষের এবং রোবটের মধ্যে পার্থক্য করতে ব্যবহৃত হয়।
এটি কোনও কোম্পানিকে স্প্যাম আউট ফিল্টার করতে বা লগইন এবং পাসওয়ার্ড বর্বর করার প্রচেষ্টা সনাক্ত করতে সহায়তা করে। এমনকি বাংলাদেশেও এর ব্যবহার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সারা বিশ্বের প্রেক্ষাপটে সিম নিবন্ধনের জন্য বায়োমেট্রিক পদ্ধতি একটি নতুন বিষয়। বাংলাদেশ দ্বিতীয় দেশ হিসেবে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন চালু করেছে। এছাড়াও ভোটার আইডি কার্ডেও বায়োমেট্রিক (আঙুলের ছাপ) পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে, সিস্টেমটি সঠিকভাবে ব্যক্তিদের সনাক্ত করার ক্ষেত্রে আরো উন্নত হতে পারে ।