স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রযুক্তি সহায়তা দেবে মাইক্রোসফট ও ইজেনারেশন

কর্তৃক প্রযুক্তি সারাদিন
0 মন্তব্য 489 ভিউজ

দেশের শীর্ষস্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি ইজেনারেশন এবং মাইক্রোসফট যৌথভাবে ‘ক্রিয়েটিং বাংলাদেশি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিজ বাই বিল্ডিং মডার্ন ওয়ার্কপ্লেস’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

বৈঠকে ডাটা, শক্তিশালী মেট্রিক্স এবং এ্যানালিটিকাল ট্যুলস, উৎপাদনশীলতা বাড়ানো, কর্মীদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি এবং প্রক্রিয়ার প্রবাহের মাধ্যমে কর্মক্ষেত্রের অন্তর্দৃষ্টি তৈরি করে আন্তর্জাতিক কোম্পানি তৈরিতে কৌশল নির্ধারণের বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এখানে ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার জাতীয় ভিশন বাস্তবায়নে বাংলাদেশি কোম্পানিগুলো তাদের বিদ্যমান কৌশল সম্পর্কে আলোচনা করে।

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত বাংলাদেশের ২.৬ ট্রিলিয়ন ডলার জিডিপি এবং ৭০০ বিলিয়ন ডলার এর বেশি রফতানি বাজারে প্রবেশের জন্য প্রস্তুত হবার প্রত্যাশা ও আশাবাদী মনোভাব তুলে ধরেন। বিভিন্ন খাতের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান কারিগরি কর্মকর্তা (সিটিও) এবং আইটি বিভাগের প্রধানরা এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

ইনেজারেশন চেয়ারম্যান শামীম আহসানের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতীম দেব। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, এ.কে খান অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামরান বকর, মাইক্রোসফটের দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া মার্কেটের মার্কেটিং অ্যান্ড অপারেশন ডিরেক্টর জাইদ আলকাধি, ইজেনারেশন গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান এস এম আসরাফুল ইসলাম, সহজের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মালিহা কাদির, গ্রামীণফোনের ডেপুটি সিইও ইয়াসির আজমান, বুয়েটের সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোস্তফা আকবর, এফবিসিসিআই পরিচালক ও মিনিস্টার গ্রুপের চেয়ারম্যান রাজ্জাক খান, এমজিআই এর সিনিয়র নির্বাহী পরিচালক তাইফ বিন ইউসুফ, ইফাদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক ও কেএসআরএমের ডেপুটি ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান এবং ইও বাংলাদেশের সভাপতি ও আমান গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান তাহসিন আমান।

শামীম আহসান বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী যেসব কোম্পানি ইতিমধ্যেই প্রযুক্তির সম্ভাবনা অনুধাবন করতে পেরেছে তারা ডিজিটাল রূপান্তর কৌশল বাস্তবায়নের মাধ্যমে ব্যবসাকে দ্রুত সম্প্রসারণ করতে এবং বড় ধরনের লাভজনক অবস্থানে পৌঁছাতে পারছে। ২০৪১ সালে রূপকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশকে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে বাংলাদেশে একই ধরনের বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং অবশ্যই বহুজাতিক কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। বাংলাদেশ থেকে বহুজাতিক কোম্পানি তৈরি করতে ব্যবসায়ের নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা, ব্যবসায় আদর্শ, দক্ষ মানবসম্পদ এবং নীতিগত সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে। এসব বহুজাতিক কোম্পানি তৈরির ক্ষেত্রে ব্যবসায় সম্প্রসারণ এবং অগ্রযাত্রাকে টেকসই করতে প্রযুক্তির মেলবন্ধন আবশ্যক। সমন্বিত যন্ত্রাংশ, অগ্রগামী ব্যবসায় প্রক্রিয়া, ব্যবসায় বৃদ্ধিমত্তা পদ্ধতি, তথ্য বিশ্লেষণ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সল্যুশনের সমন্বয়ে স্থানীয় কোম্পানিকে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ এবং জাতীয় রূপকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করবে। বাংলাদেশ ডিজিটাল-ফাস্ট কৌশল গ্রহণ এবং উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে সক্ষমতা তৈরি করার এখনই সময়, যা বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে সহায়তা করবে।

প্রধান অতিথি পার্থপ্রতীম দেব বলেন, স্থানীয় কোম্পানিকে আরও প্রতিযোগিতাপূর্ণ এবং প্রযুক্তিবান্ধব হিসেবে তৈরি করতে মাইক্রোসফটসহ অন্য আন্তর্জাতিক কোম্পানির সঙ্গে ইজেনারেশনের মতো কোম্পানির অংশীদারিত্বকে আমি সাধুবাদ জানাই। সরকার সবসময় প্রযুক্তির অগ্রযাত্রাকে স্বাগত জানায়, যা আমাদের স্থানীয় কোম্পানি এবং অর্থনীতিকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

মাইক্রোসফটের পরিচালক জাইদ আলকাধি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই যুগে প্রত্যেক সিএক্সও বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে সম্পর্কিত থাকতে এবং ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান। আর সেটি করতে কোম্পানিকে ডিজিটাল হতে হবে এবং কর্মক্ষমতা প্রসারণে ক্লাউডের মতো সমাধান গ্রহণ করতে হবে। সত্যিকারের ডিজিটাল প্রতিষ্ঠান হতে শুধুমাত্র প্রযুক্তিবান্ধব হলেই হবে না, এর জন্য ব্যবসায়কে তাদের ব্যবসায় পদ্ধতিকে পুনরায় নির্ধারিত করা এবং অংশীদারদের সঙ্গে ব্যক্তি, তথ্য এবং প্রক্রিয়ার সমন্বয়ে গ্রাহকদের জন্য ভ্যালু তৈরি করা এবং প্রতিযোগিতাপূর্ণ হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করা প্রয়োজন। বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে, তাই সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের কোম্পানিগুলোকে তাদের প্রতিষ্ঠানে ক্লাউড সমাধান, তথ্য বিশ্লেষণ ও আইওটির মতো নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করতে হবে।

মাইক্রোসফট এবং আইডিসি এশিয়া প্যাসিফিক প্রকাশিত সাম্প্রতিক তথ্যে জানা গেছে, যেসব কোম্পানি ডিজিটাল রূপান্তর করতে পেরেছে সেসব ব্যবসায় ২০২০ সালে ৭০ শতাংশের অধিক গ্রাহক অধিগ্রহণ প্রত্যাশা করছে। আন্তর্জাতিক জরিপে দেখা যাচ্ছে, প্রায় ৫০ শতাংশ আন্তর্জাতিক কোম্পানি তাদের কর্পোরেট কৌশলের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও ব্যবসায় উন্নয়নে ডিজিটাল রূপান্তরসহ আইটি অবকাঠামোতে প্রচুর পরিমাণে বিনিয়োগ করা শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক সিএক্সওরা ডিজিটাল মডার্ন ওয়ার্কপ্লেস ভিশন বাস্তবায়ন করছে যা বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন এবং টেকসই অর্থনীতির ক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

স্থানীয় পাবলিক এবং প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে ইন্টেলিজেন্ট ক্লাউড এবং ইন্টেলিজেন্ট সফটওয়্যার এর সুবিধা গ্রহণ করতে পারে সেই লক্ষ্যে মাইক্রোসফটের সাথে যৌথভাবে কাজ করছে ইজেনারেশন। মাইক্রোসফটের একমাত্র বাংলাদেশি এলএসপি হিসেবে ব্যবসায় মান পুনর্গঠন, কর্মী ও গ্রাহকদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং ব্যবসায় প্রক্রিয়াকে অপটিমাইজেশনের মাধ্যমে জনগণ, ডাটা এবং প্রক্রিয়াকে একত্রীকরণ করে দেশের ডিজিটাল রূপান্তরে সরকার, মাইক্রোসফট এবং অন্য অংশীদারদের সঙ্গে একাত্মভাবে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। গ্লোবাল সিস্টেমস ইন্টিগ্রেটর কোম্পানিটির অত্যাধুনিক প্রযুক্তি যেমন ব্লকচেইন, কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং, তথ্য বিজ্ঞান, ইন্টারনেট অব থিংস ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ টিম রয়েছে।

0 মন্তব্য
0

তুমিও পছন্দ করতে পার

মতামত দিন