বৃত্ত এর ক্ষেত্রফলের সূত্র তো সবার জানা তাই না? হ্যা A=πr^2। এখানে আমরা A দ্বারা ক্ষেত্রফল বুঝাই অর্থাৎ এরিয়া আর π(পাই) হলো একটি ধ্রুবক এবং r=ব্যাসার্ধ। কিন্তু একটা মজার জিনিস জানো জারা নাইন টেন পর্জন্ত পড়ালেখা করেছ তারা শুধু এই সূত্র টা মুখস্ত করেছ। কেউ কি কখনো জিজ্ঞেসা করেছ এটা কিভাবে আসে অথবা এটা কোথা থেকে আমদানি করা হলো। এর প্রমাণের পিছনে যে এক বিশাল গাণিতিক বিষয়ের জোগসাজেশ রয়েছে। আসলে ব্যাপার টা শুধু গাণিতিক নয় ব্যাপারটা বিজ্ঞানের প্রায় প্রত্যেকটা শাখায় ব্যাপকভাবে ব্যাবহার হচ্ছে।
এই জিনিসই হচ্ছে ক্যালকুলাস।ক্যালকুলাস এর আবিষ্কারক মূলত কে এটা নিয়ে দুইজনের মধ্যে ভালোরকম একটা মতভেদ আছে।এই দুইজন হল স্যার আইজ্যাক নিউটন এবং গটফ্রেড লিবনিজ। আমি আজকে এদের দুইজন বা ক্যালকুলাস এর ইতিহাস নিয়েও কিছু বলব না,আজকে আমি ক্যালকুলাস আসলে কি এবং এর দ্বারা কি কাজ করা হয় এটা সম্পর্কে মোটামুটি একটা ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করব। ক্যালকুলাস এর দুইটি সাধারন পরিধি রয়েছে ,প্রথমটি ডিফারেন্সিয়াল এবং পরেরটি ইন্টেগ্রাল।
ডিফারেন্সিয়াল ক্যালকুলাসঃ আমরা স্থানংক ব্যাবস্থা মনে হয় জানি। এক্স(ভুজ) অক্ষ ওয়াই অক্ষ(কোটি)।
ধরো আমি তোমাকে একটা বৃত্তাকার রাবার(মেয়েরা মাথা বাধতে অথবা কাগজ গোল করে লাঠির মত রাখতে যে রাবার ইউজ করা হয়) নিতে বললাম। রাবারটাতো বক্র রেখা তাই না? এখন বললাম রাবারটাকে মাঝ বরাবর দুইভাগ করো দেখবে আগে রাবার টা জতটুকু বাঁকা ছিলো এখন তার থেকে একটু কম বাঁকা রাবারটাকে যদি একদম কাটতে কাটতে ছোট করে ফেলো দেখবে রাবারের ছোট অংশ গুলো সরলরেখা হয়ে গেছে।ধরুন আমরা একটা সরলরেখা কল্পনা করি। এই সরল রেখা টি এক্স অক্ষের ধনাত্নক দিকের সাথে ঘড়ির কাটার বিপরীত দিকে যে কোণ উৎপন্ন করে ঐ কোণটির ট্যান(ত্রিকোণমিতি আমরা পারি ধরে নিয়ে) সেটিকে বলা হয় ঐ সরলরেখার ঢাল। হ্যা বুঝলাম যে একটা সরলরেখা আর এক্স অক্ষ সুন্দর করে একটা চিরচেনা কোণ উতপন্ন করে । কিন্তু আমি যদি একটা বক্ররেখা দেই? তখন কি এক্স অক্ষের ধনাত্নক দিকের সাথে কিরকম কোণ হচ্ছে সেটা বলা যাবে? এখানে তো প্রতি মুহুর্তেই দিক পরিবর্তন হচ্ছে তাহলে প্রতি মুহুর্তে কোণ এর ও পরিবর্তন হচ্ছে তাই না? এখানে তাহলে আমাদের কোন বিন্দুতে ঢাল কিরকম সেটা কিভাবে বের করতে হবে?
অর্থাৎ কোন বক্ররেখাকে ছোট ছোট অংশে কাটতে পারলে বক্র রেখাটি ক্রমশ সরলরেখায় পরিণত হয়। জত বেশি ছোট করতে পারবে তত এক্সাক্ট সরলরেখা হবে ।এখন উপরের কথায় আসা জাক।আমি যে তোমাকে বক্র রেখাটাকে দিয়েছি এটাকে যদি তুমি কেটে কেটে অনেক ছোট ছোট কণায় পরিণত করো তাহলে অতি সহজেই তুমি সরলরেখা পাবে এবং সরলরেখার ঢাল কেমনে বের করতে হয় আমরা তা জানি। মূলত ডিফারেন্সিয়েশন এটাই।
ডিফারেন্সিয়েশনএর কাজ হল কোন বক্র রেখাকে ছোট ছোট খন্ডে ভাংগা(জতটূকূ ছোট সম্ভব) এবং এর সাহাজ্যে ঐ বক্র রেখার কোন বিন্দুতে ঢাল বের করা।অর্থাত ঐ বক্ররেখার কোন বিন্দু কতটুকু হেলে আছে এক্স অক্ষের ধনাত্নক দিকের সাথে ঘড়ির কাটার বিপরীত দিকে তা বের করা। এই ক্ষুদ্র অংশ প্রকাশের জন্য dx অথবা এক্স এর জায়গায় অন্য চলক যেমন dt ইত্যাদি ব্যাবহার করা হয়। আমরা ঢালের ব্যাসিক যে সূত্র অর্থাৎ ট্যান থেটা দিয়ে শিখেছি ওটা দিয়ে শুধু সরল্রেখার ঢাল পাওা জায় কিন্তু ডিফারেন্সিয়েশন দিয়ে সরলরেখা বক্র রেখা সবগুলোর ই পাওয়া জায়। আর হ্যা বক্র রেখার প্রত্যেকবিন্দুতে ঢাল কিন্তু সমান নয় কারণ সময়ের সাথে সাথে এটি দিক পরিবর্তন করে। কিন্তু সরলরেখা দিক পরিবর্তন করে না বলে এর কোণ সবসময় ধ্রুবক থাকে তাই ঢাল ও ধ্রুবক।