এবছরের শুরুতেই দক্ষিণ কোরিয়ান কোম্পানি স্যামসাং লঞ্চ করেছে গ্যালাক্সি এস২০ সিরিজ। এই ফ্ল্যাগশিপ সিরিজ লঞ্চ হওয়ার পরই কথা উঠতে শুরু করেছে পরবর্তী সিরিজ গ্যালাক্সি এস ৩০ কে নিয়ে। স্বাভাবিক ভাবেই আগামী বছরে বাজারে স্যামসাং তাদের এই গ্যালাক্সি এস ৩০ সিরিজকে নিয়ে আসবে। তবে এই সিরিজের ফোনগুলি ঠিক কতটা সাড়া ফেলতে পারে সেই নিয়ে বিস্তর জল্পনা শুরু হয়েছে, যার মূল কারণ সিরিজটির ক্যামেরা সেন্সর।
সম্প্রতি, দ্য ইলেক নামের একটি কোরিয়ান পাবলিকেশনের প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে আসন্ন গ্যালাক্সি এস ৩০ সিরিজে টাইম-অফ-ফ্লাইট ৩ডি সেন্সর থাকবেনা। সংস্থার সদ্য লঞ্চ হওয়া গ্যালাক্সি এস২০ ফোনটিতেও এই সেন্সর নেই। অথচ স্যামসাংয়ের পূর্ববর্তী গ্যালাক্সি এস২০+ এবং গ্যালাক্সি এস২০ আল্ট্রা ফোনদুটিতে এই ৩ডি ToF সেন্সর ছিল। এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, ToF সেন্সরের সাহায্যে ফোনের ক্যামেরা থেকে ৩ডি ছবি ক্যাপচার করা যায়, এবং ছবিগুলিতে দূর্দান্ত ডিটেলিং দেখা যায়।
দ্য ইলেকের ওই প্রতিবেদনে অ্যাপল-এর আইফোন ১২ এবং আইপ্যাড প্রো ডিভাইসদুটির সাথে তুলনা করে, স্যামসাংয়ের সেন্সরের নিম্নমানের পারফরম্যান্সের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। স্যামসাং নিজেও স্বীকার করছে এই নতুন ফোনটিতে আহামরি কোনো কন্টেন্ট নেই।
প্রযুক্তিগত দিক থেকে, এমনিতে অ্যাপলের সাথে স্যামসাংয়ের ঠান্ডা লড়াই চলে। ইদানীং দুটি সংস্থার ডিভাইসের সেন্সরে বেশ বৈষম্য ধরা পড়ছে। যেখানে অ্যাপল LiDAR মডিউলসহ ডাইরেক্ট ToF সেন্সর ব্যবহার করে, সেখানে স্যামসাং শুধুমাত্র ইন-ডাইরেক্ট ToF সেন্সর ব্যবহার করে। ফলে, অ্যাপল ডিভাইসের ক্যামেরাগুলি ৬ মিটার অবধি দূরত্ব পরিমাপ করতে পারে, কিন্তু স্যামসাংয়ের সেন্সরটি ৩ মিটার পরিসর অর্জন করতে পারে।
প্রসঙ্গত, স্যামসাং বা অ্যাপলের মধ্যে কেউই নিজে ToF সেন্সর বানায় না, উভয়েই Sony-র কাছ থেকে কম্পোনেন্ট কেনে। তবে Sony এর সাথে Apple এর বিশেষ এই ডাইরেক্ট ToF সেন্সর চুক্তি আছে। যা সনি আর অন্য কোনো কোম্পানিকে সরবরাহ করেনা। সেকারণে স্যামসাংয়ের কাছে ইন-ডাইরেক্ট ToF সেন্সর ব্যবহার করা ছাড়া বিকল্প নেই। অতএব, এই ঘটনায় স্যামসাংকে দোষী সাব্যস্ত করা একেবারেই অনুচিত হবে। তবে শোনা যাচ্ছে স্যামসাং শীঘ্রই অন্য কোম্পানির সাথে যুক্ত হয়ে ডাইরেক্ট ToF সেন্সরের ওপর কাজ শুরু করবে।