সাধারণ অবস্থায় রক্তের প্রোটিন, বিশেষ করে অ্যালবুমিন প্রস্রাবের সঙ্গে নির্গত হওয়ার কথা নয়। তবে কখনো কখনো কোনো কোনো ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপের রোগীকে চিকিৎসক সতর্ক করেন, তাঁর প্রস্রাবের সঙ্গে আমিষ যাচ্ছে। এ ছাড়া অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় এবং আরও নানা কারণে প্রস্রাবের সঙ্গে আমিষ যেতে পারে। একে বলা হয় প্রোটিনিউরিয়া বা এলবুমিনিউরিয়া। এ সমস্যাকে অনেক সময় কিডনি অকার্যকারিতার প্রথম ধাপ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
এ সমস্যার তেমন কোনো উপসর্গও নেই। তবে প্রস্রাবে প্রোটিনের মাত্রা বেড়ে গেলে গোড়ালি, হাত, পেট বা মুখ ফুলে যায়, দুর্বল লাগে, প্রস্রাব ঘোলা সাদাটে হয়ে যায়। অনেক বেশি পরিমাণে প্রোটিন গেলে সে অবস্থাকে নেফ্রোটিক সিনড্রোম বলে। অনিয়ন্ত্রিত গ্লুকোজ ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণই এ সমস্যার প্রধান সমাধান। কিডনি জটিলতা বা রোগ থাকলে তার চিকিৎসা করাতে হবে। এ ছাড়া সঠিক ডায়েট পরিকল্পনাও দরকার।
প্রোটিনিউরিয়া কমাতে লো প্রোটিন ডায়েট সহায়ক। তবে ডায়েট থেকে পুরোপুরি প্রোটিন বাদ দেওয়া উচিত নয়। তাহলে অপুষ্টি, মাংসপেশির ক্ষয় হতে পারে। আবার অতিরিক্ত প্রোটিন টক্সিন হিসেবে জমা হয়। তাই শরীরের ওজন অনুসারে প্রয়োজনমতো প্রোটিন খেতে হবে। যেমন কারও ওজন ৬০ কেজি হলে তিনি দৈনিক ৪৮ থেকে ৬০ গ্রাম প্রোটিন খাবেন। মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ইত্যাদি থেকে প্রোটিন পাওয়া যায়। তবে প্রক্রিয়াজাত মাছ-মাংসে লবণ বেশি থাকে। তাই তাজা মাছ-মাংসই খাওয়া উচিত। খাদ্যতালিকা থেকে ডাল একেবারে বাদ না দিয়ে দৈনিক প্রোটিনের চাহিদা পূরণে যতটুকু দরকার, ততটুকু খেতে হবে।
লবণ বা সোডিয়াম নিয়ন্ত্রণও জরুরি (দৈনিক ২ গ্রামের বেশি নয়)। পটাশিয়াম ও ফসফরাসের বিষয়টিও ভাবতে হবে। প্রোটিনিউরিয়া সমস্যাগ্রস্ত রোগীর রক্তে চর্বি বেড়ে যাওয়া ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেশি। তাই তেল-চর্বি, বিশেষ করে সম্পৃক্ত চর্বি কম খেতে হবে।