আউটসোর্সিং বা ফ্রিল্যান্সিং কাজে কোনো নির্দিষ্ট অফিস টাইম নেই, নেই কোনো জবাবদিহিতা, বা কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম। বর্তমান বিশ্বে ফ্রিল্যান্সিং এখন অতি জনপ্রিয় হলেও বাংলাদেশে এখনো ফ্রিল্যান্সিংকে পেশা হিসেবে বিবেচিত হয়না। বর্তমানে যে সকল মার্কেটপ্লেস রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে 99design, up work, Fiverr, Freelancer। যে কোন ফ্রিল্যান্সিংয়ে পা বাড়াতে হলে কয়েকটি বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে।
ফ্রিল্যান্সিংয়ে যে কাজগুলো রয়েছে, সেগুলো দুই ভাগে ভাগ করা যায়। তুলনামূলক সহজ কাজ এবং তুলনামূলক কঠিন কাজ। সহজ কাজগুলোর মধ্যে ডাটা-এন্ট্রি, পারসোনাল এসিস্টেন্ট, আর্টিকেল লেখা ইত্যাদি এবং তুলনামূলক কঠিন কাজগুলোর মধ্যে- গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, ওয়েভ ডিভেলপমেন্টের মতো কাজ। অবশ্য আপনি যে কাজই জানেন, সেই বিষয়ে একজন ছোটখাটো বিশেষজ্ঞ হতে হবে আপনাকে। আপনি যে কাজ জানেন, তার একটা পোর্টফলিও তৈরি করুন। তার জন্য পরিচিত কাউকে বিনামূল্যে কিছু কাজ করে দিতে পারেন। ধরুন, আপনি গ্রাফিক ডিজাইনার। তাহলে কাউকে বিজনেস কার্ড এবং কোনো কোম্পানিকে লগো তৈরি করে দিন। তাহলে আপনার দক্ষতা বাড়বে ও সুন্দর একটা পোর্টফলিও তৈরি হবে। মনে রাখবেন ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হতে হলে ভালো একটা প্রোফাইল বানানো কিন্তু খুব বেশি জরুরি। কারো রেফারেন্সে কাজ করলে তো আর কোনো কথাই নেই। সেই সাথে ইংরেজি ভাষাটাও জানা অত্যন্ত জরুরি। কারণ যেসব মার্কেটপ্লেসে আপনি কাজ করবেন, তার ৯৯ শতাংশ ক্লায়েন্টই বিদেশি।
কাজের পাশাপাশি সেই কাজের পারিশ্রমিক সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। প্রথম অবস্থায় আপনি কাজ পাবার জন্য হয়তো কম টাকায় বিড করবেন। কিন্তু সঠিক পারিশ্রমিকটা জানা না থাকলে নতুন অবস্থায় পারিশ্রমিকটা খুব কম হলেও ক্লায়েন্ট আপনাকে অদক্ষ মনে করবে। আর মাত্রাতিরিক্ত বেশি চাইলে কাজ পেতেও অসুবিধা হবে। ছোট খাট কিছু ব্যাপার আগে থেকে জানা থাকলে প্রাথমিক সমস্যা গুলো কাটিয়ে উঠা যায়। আস্তে আস্তে অভিজ্ঞতা বাড়লে সব কিছুই সহজ হয়ে যাবে।
পেমেন্ট মেথডের কথা বললে বলা যায় ফ্রিল্যান্সিং যতটুকু সহজ মনে হয়, আসলে ততটুকু সহজও নয়। এতে অনেক বাধা-বিপত্তিও রয়েছে। অনেক সময় ক্লায়েন্ট পারিশ্রমিক দিতে দেরি করে, বা নতুন প্রোফাইল হলে নানা রকম সমস্যা করে। সেক্ষেত্রে নতুন কাজ শুরু করার আগে ক্লায়েন্টের প্রোফাইলও ভালো ভাবে দেখে নিতে হবে। 99design-এর মতো মার্কেটপ্লেসে পেমেন্ট প্রুফ শতভাগ। এছাড়া অন্যান্য মার্কেটে দুই ধরনের কাজ হয় ফিক্সড জব বা ঘন্টায় পেমেন্ট জব। তবে সব সময় নিরাপদ হল ঘন্টায় পেমেন্ট জব। সুতরাং শুরুতেই এসব বিষয়ে ভালোভাবে জেনে বুঝে শুরু করতে হবে।
সর্বোশেষ কথা হলো ধৈর্য ধরে কাজকে ভালোবাসে কাজে লেগে থাকতে হবে। প্রথম দিকে অনেক বাধা থাকবেই সেটা নিয়ে হতাশ হলে চলবে না। তাই বলে হাল ছেড়ে দিলে চলবে না। কোনো মাসে আয় অনেক বেশি হতে পারে, আবার কোনো মাসে পরিমাণ একেবারে কমও হতে পারে। অতএব, শুরুতে এই সব বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারনা নিয়েই ফ্রিল্যান্সিংয়ে আশা উচিৎ। কারো কথা শুনে এখানে আশা বোকামি ছাড়া আর কিছুই না। যে যত পরিশ্রম করবে বা কাজে দক্ষ হবে তার উপরে নির্ভর করবে তার মাসিক আয়।