বিশ্বের অন্যতম প্রযুক্তি সমৃদ্ধ প্রতিষ্ঠান আমাজনে ব্যবসায়ের প্রপোজাল দেওয়া হয় মেমোতে। হ্যাঁ সত্যিই, অনেক বছর আগেই আমাজনে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় সফল এই ই-কমার্স আমাজন এবং শীর্ষ ধনীদের তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছেন এর প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস। তিনি যখন কোনো অনুষ্ঠানে যান তার বক্তব্যে উঠে আসে তার জীবন এবং আমাজনের অনুপ্রেরণামূলক গল্প। তেমনি এক সেমিনারে বেজোসকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, প্রযুক্তি নির্ভর একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমাজনে আধুনিকায়নের দিক থেকে কোন পদক্ষেপটিকে তিনি স্মার্ট বলে বিবেচনা করবেন। প্রতি উত্তরে বেজোস বলেন, ‘ অনেক অনেক বছর আগে আমরা আমাজনে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন পদ্ধতি নিষিদ্ধ করেছি। পাওয়ার পয়েন্টকে না বলেছি এবং আমাদের কর্মীরাও এতে একমত পোষণ করেছে। কারণ এই পদ্ধতি অনেক কর্পোরেট অফিস এবং কর্মচারীদের জন্য সর্বনাশ ডেকে এনেছে।’
জেফ বেজোসের মতে, এটাই সবচেয়ে স্মার্ট কাজ যা তিনি আমাজনের জন্য করেছন। এখন প্রশ্ন আসতে পারে, তাহলে আমাজনের কর্মীরা কীভাবে বিজনেস আইডিয়া অন্যদের মধ্যে শেয়ার করেন। সিএনবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেজোস মিটিং এবং আইডিয়া জেনারেশনের জন্য একটি নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন। আমাজনে মিটিং শুরু হয় ৩০ মিনিট রিডিং সেশনের মধ্য দিয়ে। মিটিংয়ে প্রত্যেক কর্মচারীকে ছয় পৃষ্ঠার একটি ন্যারেটিভ স্ট্রাকচারে মেমো দেওয়া হয় যা তাদেরকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পড়তে হয়। এই পদ্ধতিকে বেজোস ব্যাখ্যা করতে গিয়ে জানান, মেমো প্রত্যেকটি কর্মীদের মধ্যে একটি কনটেক্সট তৈরি করে যা থেকে একটি ভালো আলোচনা তৈরি হয়। এছাড়া মেমো পড়ার সময় সবাইকে নোট নেওয়ার জন্য বলা হয়ে থাকে। যার ফলে গঠনমূলক আলোচনার মধ্য দিয়ে একটি বিষয়ে কাজ করা যায়।
তিনি মনে করে, পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে সকল তথ্যের ব্যাখ্যা থাকে না এবং অনেক সময় অস্পষ্ট হয়। কিন্তু মেমো হচ্ছে পুরো একটি টিম বা দলের সহযোগিতায় তৈরি করা হয়। এটা একদিন কিংবা দুই দিনে হয় না। একটি উত্তম মেমো লেখা হয়, পুনরায় লেখা হয় এবং তা দলের অন্যদের মধ্যে শেয়ার করা হয়। সর্বশেষ আলোচনার পর একটি উত্তম মেমো বের হয়ে আসে, যা শুধু মাত্র একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে সম্ভব নয়।