বর্তমান সময়ে অনেকেই আছেন যারা ফেসবুক বা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিভিন্ন পোষ্ট বা তথ্য শেয়ার করে থাকেন। এর ফলে একাউন্ট ব্যবহারকারীর নিজের অজান্তে তার অনেক ব্যক্তি গত অনেক তথ্য শেয়ার হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সচেতন হওয়ার সময় এসেছে। ব্যক্তি গত তথ্য শেয়ার হওয়ার কারনে অনলাইনে তার একাউন্টটি নিরাপদ নাও থাকতে পারে। সাইবার দুর্বৃত্তরা সব সময় এসকল ব্যবহারকারীদের খুজে বের করে এবং নানা রকম হয়রানি করে থাকে। ব্যবহারকারীর পোষ্ট বিশ্লেষণ করে দুর্বৃত্তরা ভয়াবহ ক্ষতি করে বসতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিজের সচেতনতা ছাড়া অনলাইনে কোনো কিছু পোস্ট করার পর তা নিয়ন্ত্রণ করার বিষয়টি কঠিন। তবে অনলাইনে নিরাপদ থাকতে কয়েকটি পদক্ষেপ সবারই ব্যবহার করা উচিৎ। আসুন জেনে নেই সেগুলো:
ক্লাউডে তথ্য রাখার ব্যাপারে সতর্কতাঃ
বর্তমান সময়ে অনেকেই এখন ক্লাউডে নানা তথ্য রেখে থাকেন। কাজকে সহজ করার জন্যই মূলত ক্লাউডে ব্যবহার করা হয়। ক্লাউডে তথ্য রাখার সময় খেয়াল রাখবেন আপনার কোন ব্যাক্তিগত তথ্য যেন সেখানে না চলে যায়। এছাড়া তথ্য রাখার সময় বাড়তি নিরাপত্তা নিতে ভুলবেন না। টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন বা বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা যুক্ত করে ক্লাউডের অ্যাকাউন্ট নিরাপদ রাখুন।
দু-স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা বা টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশনঃ
অনলাইনে বিভিন্ন ব্যাক্তিগত একাউন্ট ব্যবহার করার জন্য দু-স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা বা টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু করুন। মনে রাখবেন, অনলাইনের একাউন্ট নিরাপত্তায় এ পদ্ধতি বিশেষ সুরক্ষা দিতে পারে।
আলাদা আলাদা নাম ও গোপন নম্বর ব্যবহারঃ
অনলাইনে যাতে আপনাকে খুব সহজে খুঁজে বের করা না যায়, সে লক্ষ্যে প্রকৃত নাম ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করলে গুগল সার্চে সব সামাজিক যোগাযোগের প্রোফাইল একসঙ্গে দেখাবে না। তাই বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ ওয়েবসাইটে প্রকৃত নামের পরিবর্তে পৃথক নাম ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন অনলাইন বিশেষজ্ঞরা। গুগলে যাতে খুব সহজেই সার্চ করেই আপনার নাম পেতে না পারে, সে লক্ষ্যে একই নাম ব্যবহার না করাই ভালো। এছাড়া ভুল করে কখনো অনলাইনে যে কোন একাউন্ট ব্যবহার করার জন্য একই গোপন নম্বর ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। আলাদা আলাদা একাউন্টের জন্য আলাদা আলাদা গোপন নম্বর ব্যবহার করুন।
অতিরিক্ত পোষ্ট বা তথ্য শেয়ারঃ
কোন তথ্য বা পোষ্ট বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করার আগে ভালো ভাবে জেনে বুঝে শেয়ার করুন। ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে পোষ্ট করার সময় বন্ধুকে ট্যাগ করা বা লোকেশন দেওয়ার আগে কোনটি ব্যক্তিগত আর কোনটি সবার জন্য, তা ভালো ভাবে ভেবে নিন। অন্য কোন তৃতীয় পক্ষ যাতে আপনার তথ্য ব্যবহার করে সুবিধা নিতে না পারে বা আপনার অবস্থানগত তথ্য জানাজানি হয়ে গেলে আপনি যেন কোন ঝামেলায় না পড়তে হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন।
প্রাইভেসি ও সিকিউরিটি সেটিংসঃ
ফেসবুক বা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যদি পাবলিক রাখা হয়, তাহলে সবাই দেখতে পারে। তাই একে প্রাইভেট করে রাখলে কিছুটা একাউন্ট ব্যবহারকারীর নিয়ন্ত্রণে থাকে। নিরাপত্তা আরেকটু বাড়াতে বিভিন্ন অ্যাপ সেটিংসে গিয়ে অবস্থানগত তথ্য শেয়ার গোপন করে দিতে হবে। তা না হলে একাউন্ট ব্যবহারকারী কোথায় যাচ্ছেন, কী করছেন, সব তথ্যই খুব সহজেই জেনে যাচ্ছে। এতে সাইবার দুর্বৃত্তরা চাইলে খুব সহজেই ব্যবহারকারীর ওপর নজরদারি করতে পারবে।
বিদ্রঃ অনলাইনে আপনি যে কোন একাউন্ট ব্যবহার করুন না কেন সব সময় ব্যবহৃত ইমেইল ব্যবহার করুন। যে কোন ধরনের অনাকাক্ষিত কোন তথ্য আপনি ইমেইলের মাধ্যমে জানতে পারবেন। এছাড়া নির্দিষ্ট যে কোন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিছু দিন পর পর হালনাগাদ করে থাকে সে বিষয়ে তথ্য ব্যবহৃত ইমেইলে সর্ব প্রথম জানানো হয়। নিজে নিরাপদ থাকুন এবং অন্যকে নিরাপদ রাখুন।