৪জি নেটওয়ার্কের পর কাজ শুরু হয়েছে ৫জি নেটওয়ার্ক নিয়ে। ৫ম প্রজন্মের ওয়্যারলেস সিস্টেম, সংক্ষেপে ৫জি, হচ্ছে উন্নত প্রযুক্তির ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক যা যা প্রতি সেকেন্ডে ২০ গিগাবিট / সেকেন্ড গতি প্রদানে সক্ষম। বৃহৎ পরিসরের এমআইএমও (মাল্টিপল ইনপুট মাল্টিপল আউটপুট – ৬৪-২৫৬ অ্যান্টেনা) যা “৪জি এর ন্যূনতম ১০ গুণ বেশি কর্মক্ষমতা প্রদানে সক্ষম”। “লো-ব্যান্ড ৫জি” এবং “মিড-ব্যান্ড ৫জি”, ৬০০ মেগাহার্টজ থেকে ৬ গিগাহার্জ, বিশেষ করে ৩.৫-৪.২ গিগাহার্জ তরঙ্গ ব্যবহার করে থাকে। পৃথিবীর অনেক দেশেই ৫জি মোবাইল নেটওয়ার্ক নিয়ে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ২০২০ সাল ৫জি কে বাণিজ্যিকভাবে বিশ্বব্যাপী ব্যবহার করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, তবে দক্ষিণ কোরিয়া ২০১৮ শীতকালীন অলিম্পিকের দর্শকদের ৫জি ব্যবহার করে দেখিয়েছে। জাপান আশা করছে ২০২০ অলিম্পিক সময়ে সবার জন্য ৫জি উন্মুক্ত করতে পারবে। আমাদের পার্শবর্তী দেশ ভারতে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে ৫জি মোবাইল নেটওয়ার্ক নিয়ে। সম্প্রতি রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বিগ ডাটা ফর হেলথ’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বর্তমান সরকারের ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানিয়েছেন ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যেই এ প্রযুক্তি চালু করতে পারবে বলে আশা করছেন। তার মতে এর আগেও চালু হতে পারে ৫জি। তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে বর্তমান সরকার অত্যন্ত সচেতন। সব নাগরিক সেবাকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তর করা বর্তমান সরকারের মূল লক্ষ্য। ইন্টারনেট সেবা প্রদানের মাধ্যমে অল্প সময়ের মধ্যে গ্রাম এবং শহরের ডিজিটাল সেবার পার্থক্য দূরীকরণে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে বর্তমান সরকার।
উক্ত সম্মেলনে বাংলাদেশসহ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, চীন, কোরিয়া, দুবাই, পর্তুগাল, ভারতসহ বিশ্বের ১৫টিরও অধিক দেশ থেকে সরকারি-বেসরকারি, একাডেমিকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ডেটা বিশেজ্ঞরা বিভিন্ন ধরনের কেস উপস্থাপন করেছেন। আলোচনা করেছেন প্রযুক্তির নানা বিষয় নিয়ে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, আইসিটি বিভাগ, ইউএসএইড ও ইউএনডিপির সহায়তায় পরিচালিত এটুআই, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, ডাটা ফর হেলথ ইনেশিয়েটিভ (ডিফরএইচ), ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রোপিস, ইউনিসেফ, আইসিডিডিআরবি এবং মেজার ইভালুয়েশনের যৌথ উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী স্বাস্থ্য খাত উন্নয়নে বিগ ডেটা ব্যবহারে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা, বর্তমান ও সম্ভাব্য বিগ ডেটার উৎস এবং বিগ ডেটা প্রয়োগে দক্ষতা উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় কৌশলগুলোকে নির্ধারণের লক্ষ্যে এ সম্মেলন আয়োজন করে।
এছাড়া ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী টেলিটকের গ্রাহকসেবার মানোন্নয়নে সংশ্লিষ্ট লোকজনকে আরও তৎপর হওয়ার আহ্বান জানান। সরকারের চলতি মেয়াদের মধ্যেই টেলিটককে দেশের ১ নম্বর মোবাইল ফোন অপারেটর হিসেবে প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা শুরু হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি দুনিয়ার বিস্ময়কর আবিষ্কার ফাইভ-জি প্রযুক্তি টেলিটকের মাধ্যমেই শুরু হবে। সমন্বয়ের মাধ্যমে টেলিটকের চলমান উন্নয়নের কাজ দ্রুততার সঙ্গে শেষ করার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি। সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে টেলিটককে মানুষের প্রত্যাশার জায়গায় নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। প্রযুক্তি ও বিনিয়োগসহ টেলিটককে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সময়ের সাথে সাথে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
বিদ্রঃ অনুষ্ঠানে এটুআইয়ের প্রকল্প পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, ইউএনডিপির রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ সুদীপ্ত মুখার্জি এবং এটুআইয়ের পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী।