চীনে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে হুয়াওয়ের ৫জি উপকরণ সরবরাহে কোনও প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে তাদের উৎপাদন বন্ধ হয়নি। ফলে ক্রেতাদের কাছে পণ্য সরবরাহে কোনও ঘাটতি হবে না।
বৃহস্পতিবার হুয়াওয়ের ৫জি পণ্য বিভাগের প্রধান ইয়াং চাওবিন লন্ডনে সাংবাদিকদের বলেন, বেশ কিছুদিন হয়ে গেছে ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের। আর এই সময়ের মধ্যেও হুয়াওয়ের সব কারখানাই চালু ছিল। ‘প্রধান সরবরাহকারীরাও উৎপাদন চালু রেখেছে। সুতরাং ক্রেতাদের কাছে আমাদের পণ্য সরবরাহে কোনও প্রভাব পড়বে না।’
উৎপাদন সংকট না হলেও করোনাভাইরাস বিস্তারের কারণে সম্প্রতি বার্ষিক ডেভেলপার সম্মেলন স্থগিত করেছে হুয়াওয়ে। বিশ্বের প্রভাবশালী এই প্রযুক্তি জায়ান্ট ঘোষণা দিয়েছে, ওয়েবকাস্টের মাধ্যমে তারা এবারের বৈশ্বিক সম্মেলনটি আয়োজন করবে।
মার্কিন বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আর গুগলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের কারণে বিপদে পড়া হুয়াওয়ে তাদের নতুন সিস্টেম তৈরি এবং কৌশল নির্ধারণের অংশ হিসেবে ‘দ্য হুয়াওয়ে ডেভেলপার কনফারেন্স-২০২০’ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল। কিন্তু আগামী ২৭ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত তা স্থগিত করা হয়েছে।
হুয়াওয়ের ৫জি সেবার অনুমতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই দ্বন্দ্ব চলছে। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, তাদের ৫জি সেবার অনুমতি দিলে চীন সরকার সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দেশগুলোতে নজরদারি চালাবে। তবে বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে হুয়াওয়ে।
চীনে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে ধস নেমেছে দেশটির অর্থনীতিতে। ভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে গোটা হুবেই প্রদেশ। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি আংশিকভাবে চালু হয়েছে দেশটির কল-কারখানাগুলো। তবে সব কর্মী না ফেরায় এখনও পুরোদমে উৎপাদন শুরু করা যায়নি। এছাড়া রয়েছে যান চলাচলের নিষেধাজ্ঞাও। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে পণ্য পরিবহন।
পণ্য সরবরাহ না থাকায় ইতোমধ্যে হুন্দাই, নিসান, জাগুয়ার ল্যান্ড রোভারের মতো গাড়িনির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো চীনে কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। শুধু চীনেই নয়, একই কারণে হুন্দাই দক্ষিণ কোরিয়ার ও নিসান জাপানের কারখানাও বন্ধ করে দিয়েছে।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে চীনে মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। বৃহস্পতিবার ভাইরাসের উৎস হুবেই প্রদেশে প্রাণ হারিয়েছেন আরও ১১৫ জন। এ নিয়ে সেখানে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৪৪ জন।
চীনের মূল ভূখণ্ডে এ পর্যন্ত মারা গেছেন অন্তত ২ হাজার ২৪৫ জন। এছাড়া চীনের বাইরে জাপানে তিনজন, হংকংয়ে দুইজন, ইরানে দুইজন, তাইওয়ানে একজন, ফিলিপাইনে একজন, ফ্রান্সে একজন ও দক্ষিণ কোরিয়ায় একজন করে মারা গেছেন। বিশ্বজুড়ে ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৭ হাজারেরও বেশি।