‘‘টেকনোলজি আপনার অ্যাক্সিস বাড়িয়ে দিয়েছে। আপনার বিজনেসকে গ্লোবাল লেভেলে নিয়ে যাওয়া রাস্তা করে দিয়েছে।’’
প্র: ‘লিডারশিপ’ একটি বহুল ব্যবহৃত শব্দ। তবু এটি নিয়ে খানিকটা ধোঁয়াশা রয়েছে আমাদের মধ্যে। আমরা এখন যা দেখছি চারপাশে, এই অবস্থায় ‘লিডারশিপ’ বলতে ঠিক কী বুঝব?
• ‘লিডারশিপ’ বলতে দিশা দেখানো আশ্বাস দেওয়া এবং ফোকাস তৈরি করা। ‘লিডারশিপ’-এর সব থেকে বড় কোয়ালিটি হলো optimism। ইউনিভার্সিটি অফ পেনসিলভানিয়ার বিশেষজ্ঞ মার্টিন সেলিগম্যান প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ মানুষকে ইন্টারভিউ করেছিলেন জানার জন্য যে, লিডারশিপের সাফল্যের মূল রহস্য কী ও সফল নেতৃত্ব কী চিন্তা করেন? তিনি দেখেছিলেন, সফল নেতা অত্যন্ত আশাবাদী হন এবং প্রায় ৩৩০০ স্টাডি থেকে দেখা গেছে যে, লিডারশিপের আর একটি জরুরি ব্যাপার হচ্ছে vision। আর একটি বিশেষ গুণ— লিডার রেজাল্টে বিশ্বাস রাখে।
প্র: স্টার্ট আপ এবং আঁত্রেপ্রেনওরশিপ— এ দু’টি টার্মও ভীষণ পপুলার। অনেক আগ্রহ দেখাচ্ছেন ব্যবসায়। কিন্তু ব্যবসা মানে তো রিস্ক!
• হ্যাঁ এটা খুবই আগ্রহের ব্যাপার আজকে। ‘জেনারেশন ওয়াই’ অনেক বেশি আগ্রহী নিজস্ব সংস্থা বানাবার জন্য। ‘Follow your passion’— এই কথাটা এখন খুব পপুলার। আমাদের আগামী দিনের জন্যও এটা খুব জরুরি। আমাদের দেশের জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ ৩০ বছরের নীচে। যদি আমরা job seeker না হয়ে job provider হতে পারি, তা হলে নিজের ভবিষ্যৎ জীবন যেমন উজ্জ্বল তেমনই আমি আরও দশজনের জন্য কিছু করতে পারব। এটা একটা খুব ভালো ট্রেন্ড। বিজনেস মানে রিস্ক। কিন্তু, চাকরি মানে কি রিস্ক নেই? চারপাশে তাই কি দেখছি?
এটা বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, মানুষ তার সহজাত বিকাশকে আটকে ফেলে শুধুমাত্র ভয়ে। এটা ঘটনা যে বহু স্টার্টআপ ফেলিওর হয়। কিন্তু যদি তার কারণ খতিয়ে দেখা হয় দেখা যাবে যে, সেগুলো ফেল হওয়ার কারণ কিছু নির্দিষ্ট ভুল ধারণা। আজকে বহু নতুন স্টোরি তৈরি করছেন অনেক তরুণ ছেলে মেয়ে বিভিন্ন ইনোভেটিভ পদ্ধতিতে কাজ করে। টেকনোলজি আপনার অ্যাক্সিস বাড়িয়ে দিয়েছে। আপনার বিজনেসকে গ্লোবাল লেভেলে নিয়ে যাওয়া রাস্তা করে দিয়েছে। সুতরাং যদি ঝুঁকি না নেন, তা হলে সাকসেস দেখবেন কী করে?
প্র: আমরা সবাই সাকসেস চাই ব্যক্তিগত ভাবে, পেশাগত ভাবে। ব্যর্থতা কেউ চাই না। কিন্তু সেটব্যাক খুব হতাশ করে। কী ভাবে এর মোকাবেলা করব?
• এটা ঘটনা যে, আমরা অনেক রকম ভাবে চেষ্টা করি সেটব্যাক হওয়ার পরে ইমোশনাল ডিস্টার্বেন্সকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য। কিন্তু কখনও কখনও মনে হয় সব রাস্তাই বোধ হয় বন্ধ। এর জন্য একটা খুব সুন্দর রাস্তা রয়েছে। সেটা হলো— আমরা যদি আমাদের মাইন্ড কন্ডিশনিং করি। দেখুন যদি আমরা নেভি সিল বা কমান্ডোদের দেখি, দেখতে পাবো কোনও কিছুর আগে তাদের একটা ভয়ঙ্কর মানসিক প্রস্তুতি এবং শারীরিক প্রস্তুতি থাকে। কেন? কারণ, যে কোনও যেমন মিশন সফল হতে পারে, তেমন ব্যর্থও হতে পারে। ওদের ক্ষেত্রে ব্যর্থতা মানে কী, আমরা সবাই জানি। সেই কারণে প্রস্তুতিও ভয়ঙ্কর শক্ত। যদি স্পোর্ট স্টারদের দেখেন, তা হলে দেখবেন ওদের মেন্টাল ও ফিজিক্যাল কন্ডিশন দারুণ ভাবে করতে হয়। আজকের দিনে বহু সফল ব্যক্তিত্ব ঠিক এইরকম একটা মেন্টাল টিউনিং রেগুলার প্রাক্টিস করেন। যা তাঁকে তাঁর সারাদিনের এনার্জি সাপোর্ট করে। মেডিটেশন আজকে সারা পৃথিবী জুড়ে বিখ্যাত এবং বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত যে, মেডিটেশন আমাদের ব্রেনে নিউরো প্লাস্টিসিটি তৈরি করে। যার মানে, আমরা মানসিকভাবে অনেক বেশি ফ্লেক্সিবল এবং ফোকাসড হই।
প্র: সাফল্য পেতে গেলে কোন কোয়ালিটিগুলো জরুরি?
• আমরা যেসব পড়াশোনা করে, শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জন করে ইন্ডাস্ট্রিতে আসি, এসে দেখি বাস্তব ক্ষেত্রে সেই শিক্ষার ৯০ ভাগ কোনও কাজে লাগে না। সফলতার প্রাইমারি কন্ডিশন— আপনার নিজের শক্তিতে বিশ্বাস করা। নিজস্ব যোগ্যতা বাড়িয়ে তোলা এবং নিজের সম্পর্কে অনাস্থা দূর করা।
অনেক সময়ে আমাদের চিন্তাই ভিতর থেকে আমাদেরকে দুর্বল করবে। মনে রাখতে হবে প্যারেটো ফর্মুলা— ৮০:২০। মানে, আপনার যা উদ্যোগ তার মধ্যে মাত্র ২০ ভাগ রেজাল্ট দেবে বাকি ৮০ ভাগ হয়তো কোনও রেজাল্ট দেবে না। কিন্তু ২০ শতাংশ অসাধারণ সফলতা দিতে পারে। আর যে কাজটা করতে যাচ্ছেন, তার সম্পর্কে যথাযথ ইনফরমেশন থাকা জরুরি। কারণ, রিয়্যালিটি চেক থাকলে আপনি অনেকটাই কনফিডেন্ট থাকবেন।