এসইও কি এবং কেন – ফ্রি এসইও নাকি পেইড এসইও

কর্তৃক মাহমুদুল হাসান
0 মন্তব্য 1061 ভিউজ

বর্তমানে ইন্টারনেট প্রায় ৬৪৪ মিলিয়ন ওয়েবসাইট রয়েছে। প্রতিদিন যোগ হচ্ছে আরো শত শত ওয়েবসাইট। এতো ওয়েবসাইটের ভিড়ে সার্চইঞ্জিন গুলো কিভাবে আপনার ওয়েবসাইট খুজে পাবে তার জন্য কিছু নির্দিষ্ট কাজ করতে হয়। এসইও হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশনের সংক্ষিপ্ত রূপ। যার মাধ্যমে কোনো ওয়েবসাইট বা ওয়েবপেজকে সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহারকারীদের সার্চ বা অনুসন্ধানে প্রথম পাতার দেখানোর চেষ্টা করে থাকে। এসইও কোনো একক কাজ নয়। এটি আসলে সার্চ ইঞ্জিনের অ্যালগরিদম মেনে একাধিক কাজের সমন্বিত একটি পদ্ধতি। ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বা ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধিতে এসইওর গুরুত্ব অপরিসীম। কোন ওয়েবসাইটে ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে সেই ওয়েবসাইট সার্চইঞ্জিনের প্রথম পাতায় চলে আসে। এক কথায় বলতে গেলে ইন্টারনেটের বিশাল দুনিয়ায় আপনার নতুন ওয়েবসাইটকে ব্যবহারকারীদের কাছে তুলে ধরার জন্য এসইও করা দরকার।

নিয়ম মেনে এসইওর কাজগুলোকে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা হয়ঃ ১. অনপেজ এসইও যা ওয়েবসাইটের শুরুতে কাজ করতে হয়। ২. অফপেজ এসইও যা ওয়েবসাইট সম্পুর্ণ হলে কাজ করতে হয়। অনপেজ এসইও মূলত ওয়েবসাইটের কাজ শুরুর সময় নিয়ম মেনে কিছু বিষয় নিয়ে কাজ করতে হয়।তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো টাইটেল বা শিরোনাম নির্বাচন, মেটা ডেসক্রিপশন লেখা, ওয়েবসাইটে ব্যবহৃত ছবিগুলোতে সঠিক টাইটেল, ট্যাগ ও ক্যাপশন ব্যবহার করা, ওয়েবসাইটের বিভিন্ন পেজের মধ্যে লিঙ্ক তৈরি করা ইত্যাদি। আর অফপেজ এসইওর কাজ গুলো শুরু হয় মূলত ওয়েবসাইট সম্পূর্ণ হবার পর। অফপেজ এসইওর মধ্যে উল্লেখযোগ্য গুল হলো বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওয়েবসাইট সম্পুর্কে তথ্য শেয়ার করা, এবং অন্যান্য ভালো কিছু ওয়েবসাইটে ব্যাকলিংক তৈরি করা।

কিওয়ার্ড ও ট্যাগঃ
কিওয়ার্ড রিসার্চ হচ্ছে এসইওর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। যারা নতুন এসইও নিয়ে কাজ শুরু করেছেন তাঁরা শুরুর দিকে গুগল থেকে কিওয়ার্ড প্ল্যানার ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশ নির্বাচন করে কিওয়ার্ড রিসার্চ করতে পারেন। এছাড়া এসইও করার জন্য অনেক পেইড সার্ভিসও আছে। ফ্রি তে কাজ করবেন নাকি পেইড এটা নির্ভর করবে ওয়েবসাইট ও কাজের গুরুত্বে ওপর নির্ভর করে। তাছাড়া কাজের পারিশ্রমিকের উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে। ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট হলে ইয়স্ট এসইও প্লাগইন খুব সহজেই ব্যবহার করা যায়। এছাড়া বিভিন্ন এসইও প্লাগইনও পাওয়া যায়। অনলাইনের যে কোন কাজের জন্য কিওয়ার্ড বা ট্যাগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওয়েবসাইটের পাশাপাশি ইউটিউবের জন্য ট্যাগ গবেষনা করে খুঝে বের করতে হয়। ভিডিও বিস্তারিত বিবরণ ভালোভাবে দিতে হয়। যারা ইউটিউব নিয়ে কাজ করেন তাঁরা ট্যাগ খুঝে বের করার জন্য TubeBuddy আথবা VidIQ–এর মতো টুল ব্যবহার করতে পারেন।

হোয়াইট হ্যাট, ব্ল্যাক হ্যাট ও গ্রে হ্যাট এসইওঃ 
সার্চ ইঞ্জিনের সব নিয়ম মেনে সম্পূর্ণ বৈধভাবে একটি ওয়েবসাইটকে প্রথম পেজে নিয়ে আসার চেষ্টা করাকে বোঝায় হোয়াইট হ্যাট এসইও। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার জন্য সব সময় অবশ্যই হোয়াইট হ্যাট এসইওর চর্চা করা উচিত। অন্যদিকে, বিভিন্ন স্প্যামিং, প্রতারণা বা অবৈধভাবে অন্য মাধ্যমে এসইও করার চেষ্টা করাকে ব্ল্যাক হ্যাট এসইও বলে। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার জন্য ব্ল্যাক হ্যাট এসইও একটি আত্নঘাতী সিদ্ধান্ত। এর ফলে ওয়েবসাইট ব্ল্যাক লিস্টেড হতে পারে এবং ভবিষ্যতে আর কখনোই সার্চে নাও আসতে পারে। আর হোয়াইট হ্যাট ও ব্ল্যাক হ্যাট এসইওর মাঝামাঝি অবস্থাকে বলা হয় গ্রে হ্যাট এসইও। তবে গ্রে হ্যাট এসইও করার জন্য অবশ্যই হোয়াইট হ্যাট ও ব্ল্যাক হ্যাট এসইও সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান থাকা দরকার।

সার্চ ইঞ্জিনে কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে সার্চ করলে যে ওয়েবসাইট বা লিংকগুলো আগে আসে, সেগুলোর সেই ওয়েবসাইটের কনটেন্ট সাজানো, শব্দের সংখ্যা, ছবি ও ভিডিওর ব্যবহার এবং বিভিন্ন লিংকের ব্যবহারের কারনেই হয়ে থাকে। সুতরাং এসইওর পাশা-পাশি ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য যেন তথ্যবহুল ও বড় হয় এবং ব্যবহৃত ছবি ও ভিডিওর দিকে প্রাধান্য দিতে হবে। তথ্য দেয়ার সময় জেনে নিন আপনি যে তথ্য দিতে চান, তা অনলাইনে কী পরিমাণে খোঁজা হয়ে থাকে। ধৈর্য নিয়ে ধারাবাহিকভাবে ভালো কনটেন্ট তৈরি করতে থাকলে ওয়েবসাইটের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ে এবং একসময় তা সার্চ ইঞ্জিনের শীর্ষ স্থানে চলে আসে।

বিদ্রঃ বিভিন্ন ই-কমার্স ব্যবসা, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, সিপিএ মার্কেটিংসহ অনলাইন–ভিত্তিক নানা কাজের সফলতা নির্ভর করে এসইও–ব্যবস্থার ওপর। বিনা মূল্যে এসইও করাকে অর্গানিক এসইও এবং অর্থের বিনিময়ে বিজ্ঞাপন হিসেবে এসইও করাকে পেইড এসইও বলে। বর্তমানে এসইও-কে অনেকেই ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে।

0 মন্তব্য
0

তুমিও পছন্দ করতে পার

মতামত দিন