মাইক্রোচিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকায় শেয়ারবাজারের হিসেবে সবচেয়ে দামি প্রতিষ্ঠান এখন আর ইনটেল নয়। এবারই প্রথমবারের মাতো মাইক্রোচিপ জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানটিকে পেছনে ফেলল এনভিডিয়া। এই সংবাদের সঙ্গে আরও কিছু নিয়ামক তথ্য সামনে এসে যায়। যেমন বুধবার বিকেলে এনভিডিয়ার শেয়ার মূল্য ২.৩ শতাংশ বেড়ে এসে দাঁড়িয়েছে চারশ’ চার মার্কিন ডলারে। যে ঘটনাটি এনভিডিয়ার মোট বাজারমূল্য বাড়াতে সাহায্য করেছে।
বুধবার দিনশেষে চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটির বাজার মূল্য এসে দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার আটশ’ কোটি ডলারের ঘরে। অন্যদিকে, ইনটেলের বাজার মূল্য এখন ২৪ হাজার ছয়শ’ কোটি ডলার। — খবর রয়টার্সের। প্রতিনিয়তই প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার মূল্য ওঠানামা করে। সেইসঙ্গে শেয়ার বাজারে ওঠানামা করে প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট আর্থিক মূল্য। তবে, বুধবার এনভিডিয়ার অর্জন প্রতিদিনের শেয়ারদরের চেয়েও অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে।
মার্কিন চিপনির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকায় সেই ১৯৯৫ সাল থেকে শীর্ষ অবস্থানে ইনটেল। উইন্ডোজ ৯৫ দিয়ে পিসি বাজারের উত্থান, এরপরপরই ডটকম বিপ্লব ইনটেলকে গত ২৫ বছর শীর্ষে রাখার বিষয়ে যথেষ্টই সাহায্য করেছে।
সেই দৃশ্য বদলে যেতে থাকে ২০১০ সালের পর থেকে। ওই বছরই বাজারে আসে প্রথমবারের মতো ব্যপক জনপ্রিয়াতা পাওয়া ট্যাবলেট- আইপ্যাড, এবং ততোদিনে বাজারে নিজের অবস্থান পোক্ত করে নেওয়ার জন্য তিন বছর সময় পেয়েছে আইফোন। কাছাকাছি সময়েই অ্যান্ড্রয়েডের উত্থান যোগ হয়ে ইমেইলসহ যোগাযোগের মাধ্যমগুলো ডেস্কটপ থেকে ক্রমশ চলে এসেছে হাতের মুঠোয়। এবং এক দশক পরে আজকের বাস্তবতা হলো মোবাইল নয়, গ্রাফিক্স প্রসেসর নির্মাতা হিসেবে পরিচিত একটি প্রতিষ্ঠান নিয়ে নিল চিপ নির্মাতার শীর্ষস্থানটি।
সাম্প্রতিক বছরে নিজেদের মূল কম্পিউটার চিপ ব্যবসার পাশাপাশি ডেটা সেন্টার, অটোমোবাইল, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবসায় হাত দিয়েছে এনভিডিয়া। সেদিক থেকে বিবেচনা করলে পিছিয়ে রয়েছে ইনটেল। নিজ ব্যবসায়ে বৈচিত্র্য তৈরি করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি।
এ বছরে ইনটেলের স্টক যেখানে তিন শতাংশ হারিয়েছে, সেখানে এনভিডিয়ার বেড়েছে ৬৮ শতাংশ। কারণ বিনিয়োগকারীরা এনভিডিয়াকে বেছে নিচ্ছেন, তাদের প্রত্যাশা, করোনাভাইরাস মহামারীর সময়ে ‘বাসা-থেকে-কাজ’ ধারায় প্রতিষ্ঠানটির ডেটা সেন্টার ব্যবসা ফুলে-ফেঁপে উঠবে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বহিঃবিশ্ব বাজারের প্রতিষ্ঠানের প্রতিযোগিতার মুখেও পড়েছে ইনটেল। দক্ষিণ কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান স্যামসাং এবং তাইওয়ানের ‘তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির সঙ্গে প্রতিযোগিতার মুখে বাজার মূলধন হারিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
তবে, এনভিডিয়ার স্টক বাড়লেও, বিক্রিতে এখনও এগিয়ে রয়েছে ইনটেল। বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, এ অর্থ বছরে এনভিডিয়ার আয় ৩৪ শতাংশ বেড়ে এক হাজার চারশ ৬০ কোটি ডলারের ঘরে এসে দাঁড়াবে। অন্যদিকে ইনটেলের ২০২০ সালের আয় ২.৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়াবে সাত হাজার তিনশ’ ৮০ কোটি ডলারে।