সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুক ও ভিডিও আদান-প্রদান করার ওয়েবসাইট ইউটিউবে বাংলাদেশ থেকে যেসব বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়, তা থেকে ১৫ শতাংশ হারে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআরের নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগে এতদিন ধরে বাংলাদেশ সরকার দেশের ভৌগোলিক সীমারেখার বাইরে ভার্চুয়াল জগতে বিজ্ঞাপন থেকে কোনো শুল্ক আদায় করেননি। সম্প্রতি হাই কোর্টের এক আদেশে গুগল, ফেইসবুক, ইউটিউবের মতো ওয়েবসাইট গুলোতে বাংলাদেশ থেকে দেওয়া বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের জন্য সব ধরনের লেনদেন থেকে রাজস্ব আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এই ভ্যাট আদায়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে গত ২২ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংককে একটি চিঠি দিয়েছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড- এনবিআর।
এনবিআরের ওই চিঠি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে সোমবার (৪ মার্চ) সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চিঠিতে বলা হয়েছে হয়েছিল, মূল্য সংযোজন কর আইন ১৯৯১ এর ধারা ৩ এর উপধারা (৩) এর দফা (ঘ) অনুযায়ী বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমার বাইরে থেকে সেবা (যেমন- রয়্যালটি, বিভিন্ন ইন্টারনেট সার্ভিস, ফেইসবুক, ইউটিউব ও এ সকল মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার ইত্যাদি) সরবরাহের ক্ষেত্রে সেবা গ্রহণকারীর কাছ থেকে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট (মূসক) আদায়যোগ্য। এসব সেবার বিপরীতে পণ্যমূল্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশে পাঠানো হয়। কিন্তু কোনো কোনো ব্যাংক এ খাত থেকে মূসক আদায় করছে না বলে এনবিআরকে অবহিত করা হয়েছে। তাই বাংলাদেশের সকল বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে এ খাত হতে যথাযথ রাজস্ব আদায় নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় অনুশাসন প্রদানের জন্য এই নির্দেশনা মেলে চলতে বলা হয়েছে।
এখন থেকে বিজ্ঞাপনদাতারা ফেইসবুক ও ইউটিউবের মতো ইন্টারনেট যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের জন্য যে মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করবেন, তা থেকে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট কেটে সরকারি কোষাগারে জমা করতে হবে। এ অবস্থায় মাস্টার কার্ড, ভিসা কার্ড বা টিটি ব্যবহৃত হলেও অথবা যে কোনো মাধ্যমে পেমেন্ট হোক না কেন, ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট কর্তনপূর্বক সরাসরি ট্রেজারিতে জমা করা হবে। এনবিআরের সেই অনুরোধেই এখন ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ফেইসবুক-ইউটিউবে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া বিজ্ঞাপনের অর্থের বেশিরভাগই অবৈধ পথে যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টদের দাবি, ফলে এখাত থেকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
বিদ্রঃ এনবিআরের নির্দেশনায় বলা হয়, ফেসবুক ও ইউটিউবসহ বিভিন্ন ইন্টারনেট সার্ভিস তথা এসব সেবার বিপরীতে পণ্যমূল্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশে পাঠানো হয় তা থেকে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট কেটে নেয়া হবে। এসব মাধ্যম থেকে আয়ের উপরে কোন ধরনের মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) নেয়ার নির্দেশ এখনো দেয়া হয়নি।