করোনাভাইরাস মহামারীর সুযোগ নিয়ে ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে সাইবার প্রতারকরা। নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য জিমেইল ব্যবহারকারীদের কাছে প্রতিদিনই গড়ে তারা ১ কোটি ৮০ লাখ প্রতারণামূলক মেইল পাঠাচ্ছে। আর্থিক সহযোগিতা ও ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেয়ার মতো ফাঁদপাতা এমন ইমেইল প্রতিদিন ব্লক করে দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে গুগল।
বিশ্বের বৃহত্তম সার্স ইঞ্জিন গুগুল কর্তৃপক্ষ বলছে, সাইবার অপরাধীরা মহামারীর সুযোগ নিয়ে ফিশিং আক্রমণের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, যেখানে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশের জন্য তারা প্ররোচিত করছে। একদিনে ১০ কোটিরও বেশি ফিশিং ইমেইল ব্লক করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ২০ শতাংশ মেইল ছিল করোনাভাইরাস সংক্রান্ত। বিশ্বজুড়ে এখন ১৫০ কোটি মানুষ গুগলের জিমেইল সেবা ব্যবহার করেন। প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ফিশিংয়ের বিষয় হতে পারে করোনাভাইরাস।
ব্যক্তিগতভাবে অসংখ্য মেইল পাঠানো হচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিওএইচও) মতো কর্তৃপক্ষের ছদ্মনামে। মেইলগুলোতে সফটওয়্যার ডাউনলোড বা অনুদান দেয়ার জন্য প্ররোচিত করা হচ্ছে। সাইবার অপরাধীরা সরকারি প্রতিষ্ঠানের অনুকরণে সরকারি সহায়তা প্যাকেজগুলোকে পুঁজি করার চেষ্টা করছে। তবে সেগুলোতে অনুদান দিলে- তা চলে যাচ্ছে হ্যাকারদের অ্যাকাউন্টে। এমন প্রতারণা রুখতে প্রতিদিন কাজ করছে গুগল।
এ ধরনের মেইল বন্ধ করার উপায়ও জানিয়েছে সংস্থাটি। গুগল দাবি করেছে, তাদের মেশিন লার্নিং টুল ৯৯ দশমিক ৯ শতাংশ মেইল ব্লক করতে সক্ষম। প্রযুক্তিবিদরা করোনাভাইরাসকে পুঁজি করা ওয়েবসাইট ও স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশনও খুঁজে পেয়েছেন। ভাইরাসের বিস্তার ট্র্যাক করতে সহায়তা করে দাবি করা অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশনটি ফোন হ্যাক করে ফেলে এবং পুনরুদ্ধারের জন্য অর্থ দাবি করে।
ফিশিংয়ের বিষয়ে স্বাধীন নিরাপত্তা গবেষক স্কট হেলমি বলেছেন, ফিশিং আক্রমণগুলো সর্বদা উসকানিমূলক হয়। তারা মানুষের আবেগকে ব্যবহার করার চেষ্টা করে। এমনভাবে তথ্য উপস্থাপন করে যে আবেগপ্রবণ মানুষ কোনো কিছু না ভেবেই তাদের নির্দেশনা অনুসরণ করে। সাইবার অপরাধীরা জানে যে, করোনাভাইরাস মহামারী এখন একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়। তারা আশা করছে, সাধারণ মানুষ লোভে পড়ে মেইলে পাঠানো লিঙ্কগুলো ক্লিক করবে বা আবেগতাড়িত হয়ে নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করবে।