ক্ষুধাভাব দেখা দিলে খাবার খেতে হবে এবং খাবার গ্রহণে ক্ষুধাভাব নিবারণ হবে। খুবই সহজ একটু হিসেব। কিন্তু ক্ষুধা লাগলে কোন ধরনের খাবার খাওয়া হচ্ছে তার উপরে নির্ভর করে ঘনঘন ক্ষুধাভাব দেখা দিবে কিনা। সেক্ষেত্রে বিশেষ এক ধরনের খাবার গ্রহণে সাময়িকভাবে ক্ষুধাভাব চলে গেলেও কিছুক্ষণ পরেই আবারো খাবার খাওয়ার চাহিদা তৈরি হয়। বিশেষ সেই ধরনটি হলো লবণাক্ত বা লবণযুক্ত খাবার। লবণাক্ত খাবার শুধু পিপাসাই তৈরি করে না, ঘনঘন ক্ষুধাভাবও তৈরি করে। যা সহজেই ওজন বৃদ্ধিতে অবদান রাখে। সাম্প্রতিক এক গবেষণার তথ্য মতে, শরীরে সোডিয়াম গ্রহণের প্রভাব দীর্ঘমেয়াদী। গবেষকেরা জানাচ্ছে, লবণযুক্ত খাবারে শরীরে খাবারের চাহিদা আরও বেশি তৈরি করে। এতে করে বারবার ক্ষুধাভাব ফিরে আসে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যানডারবিল্ট ইউনিভার্সিটির গবেষণার ফল দ্য জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল ইনভেস্টিগেশনে প্রকাশিত হয়। এই পরীক্ষার জন্য অংশগ্রহণকারীদের খাদ্যাভ্যাস ও পানি গ্রহণের পরিমাণ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে এবং তাদেরকে প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ ও মেন্যুর খাবার দেওয়া হয়েছে। তবে প্রতি সপ্তাহে খাবারে লবণের মাত্রায় বৃদ্ধি করে হয়েছে- ৬, ৯ ও ১২ গ্রাম পরিমাণে। দেখা গেছে ৬ গ্রাম পরিমাণ লবণ গ্রহণে অংশগ্রহণকারীরা তুলনামূলক কম পানি পান করেছে। কিন্তু লবণের মাত্রা বেড়ে যখন ১২ গ্রাম হয়েছে তখন পানি পান না বাড়তে মূত্রের মাত্রা বেড়ে যায় কিডনির মেকানিজম কনসার্ভিং ওয়াটারের জন্য। একইসাথে তাদের ক্ষুধাভাব দেখা দেওয়ার হারও বৃদ্ধি পায়। যদিও তাদের আগের মতই একই পরিমাণ, পুষ্টি ও ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাবার দেওয়া হয়েছিল।
বাড়তি লবণ শরীরের জন্য কোনভাবেই উপকারিতা বহন করে না। উপকারিতার ঠিক বিপরীত দিক দেখা দেয় অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণে। হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা মূলক সমস্যাসহ ওজন বৃদ্ধির সমস্যাগুলো দেখা দেয় অতিরিক্ত লবণ গ্রহণের ফলে। তাই চেষ্টা করতে হবে লবণযুক্ত ফাস্টফুড বা জাংকফুড গ্রহণ থেকে যথাসম্ভব বিরত থাকার জন্য, কারণ বাইরে তৈরি এ ধরনের খাবারগুলোতে লবণ ব্যবহার করা হয় সবচেয়ে বেশি। পাশাপাশি প্রতিদিনের রান্নায় লবণের ব্যবহারও সীমিত করতে হবে।