এক জঘন্য অপরাধ সাইবার বুলিং

ইন্টারনেটের জগতে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে এখন যেকোন কার্যকলাপ ঘটানো সম্ভব। গণ আন্দোলন থেকে শুরু করে সাইবার বুলিং এর মতো জঘন্য অপরাধ সবকিছুই হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়৷ বর্তমান সময় সাইবার বুলিং এক জঘন্য রূপ ধারণ করেছে। সামাজিক ভাবে হেও হতে হচ্ছে অনেক নারীকে৷

কিছু দিন আমি আমার এক মেয়ে ক্লাসমেট কে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তুই ফেসবুকে নিজের ফটো আপলোড করিস না কেন? সে বলেছিল তোরা ছেলেরা যা ভাবে মেয়েদের সামাজিক ভাবে হেও করছিস, তার পর আর ফেসবুকে ছবি আপলোড করি কি ভাবে?আমার ওই ক্লাস মেটের কথা শুনে মন টা খারাপ হয়ে গেলো৷ কয়েকদিন আগেই নাকি তার বোন সোসিয়াল বুলিং এর মুখে পড়ে।

সাইবার বুলিং থেকে প্রতিনিয়ত জন্ম নিচ্ছে আরো নানান ধরনের সমস্যা। বিশেষ করে মেয়েরা পড়াশোনা ছেড়ে দিচ্ছে, সমাজে তাদের গুরুত্ব থাকছে না, অনেক সময় আত্মহত্যার ঘটনা শোনা যায়। বিভিন্ন ধরনের ফটো এডিটিং সফটওয়্যার দ্বারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হতে সংগ্রহীত মেয়েদের ছবি গুলো এডিট করে সামাজিক ভাবে হেয় করা হচ্ছে মেয়েদের। যুক্তরাষ্ট্রের একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে সারা পৃথিবীতে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী নারীদের ২০% সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোশ্যাল বুলিং এর শিকার হয়।

সাইবার বুলিং এর শিকার হওয়ার পর সমাজের অজ্ঞ মানুষদের কোনভাবেই বোঝানো যাচ্ছে না যে, সাইবার বুলিং এর শিকার হয়েছে তারা তো কোন দোষ নেই! অথবা সে এই ধরনের কার্যকলাপে লিপ্ত নয়। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে৷

প্রায় কমবেশি সব দেশের সাইবার বুলিং এর জন্য গুরুতর শাস্তি দেয়া হয় । বাংলাদেশেও এর আইন রয়েছে।
তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাইবার বুলিং যে করে অর্থাৎ উত্ত্যক্তকারীর কোন ধরনের নাম-পরিচয় পাওয়া যায় না৷ অর্থাৎ সচরাচর ফেক আইডি দিয়ে নারীদের বিভিন্ন ধরনের ছবি সংগ্রহ করে পরবর্তীতে ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছে।

অনেক সময় মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার জন্য সাইবার বুলিং করে অনেক অমানুষ। আপত্তিকর ছবি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার মতো থাকে অনেকের। সম্প্রতি সময়ে ফেসবুক লক নামের নতুন একটি ফিচার চালু করেছে ফেইসবুক। যার সম্পর্কে আমরা কমবেশি সবাই অবগত। সাইবার বুলিং এর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যই মূলত এই ফিচার।

বাংলাদেশ ক্রমশ সাইবার বুলিং এর প্রবণতা বেড়েই চলেছে । একটি পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে সাইবার বুলিং এ শিকার এমন পাঁচজন নারীর একজন আত্মহত্যা করে। সম্প্রতিক সময়ে প্রত্যেকটি দেশের সাইবার পুলিশ সাইবার বুলিং নিয়ে বেশ সজাগ হয়েছে। দেশের আইন ও কঠোর করা হচ্ছে৷ বাংলাদেশ এর তুলনায় কোন অংশেই পিছিয়ে নেই৷ সম্প্রতি বাংলাদেশের সাইবার পুলিশ সাইবার বুলিং এবং সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের উদ্দেশ্যে একটি সচেতনতামূলক বিবৃতি প্রদান করেছে। এর সারসংক্ষেপ নিচে উপস্থাপন করা হলো :

সাইবার বুলিং এর শিকার হওয়া মাত্রই সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের প্রোফাইল লিংক নিকটস্থ থানায় জমা দিতে হবে৷

অপরিচিত বা ফেক আইডি থেকে কোন ধরনের ছবি চাওয়া হলে তা দেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

শুধু অপরিচিত নয় পরিচিত কেউ যদি সন্দেহভাজনের তালিকা থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

যাদেরকে সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে তাদের সাথে সোশ্যাল মিডিয়ায় কনভারসেশন এর একটি স্ক্রিনশট বা কপি নিকটস্থ থানায় জমা দিতে হবে৷

সাইবার বুলিং এর বিষয়ে নিকটস্থ থানায় পুলিশ সুপার এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সচেতন হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন স্কুল-কলেজে সাইবার বুলিং এবং সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে সজাগ করা হচ্ছে৷

তার পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে সাইবার বুলিং সম্পর্কিত যাবতীয় সাহায্য এবং অভিযোগ জানানোর জন্য নিচের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে:

মোবাইলে সেবা পেতে : ০১৭৩০৩৩৬৪৩১

সরাসরী ইমেইল :smmcpc2018@gmail.com

ফেসবুকে : https://www.facebook.com/cpccidbdpolice/

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন
প্রযুক্তি সারাদিন

এস ই ও

{getBlock} $results={3} $label={এস ই ও} $type={grid1}